পুরীর গপ্পো
কথিত আছে শবর রাজ বিশ্ববাসু গভীর জঙ্গলে অত্যন্ত গোপনীয় ভাবে জগন্নাথ দেবকে নিলমাধব হিসাবে পুজো করতেন। এই কথা শোনার পর মালব্য রাজ ইন্দ্রদ্যুম্ন সেই মূর্তিকে উদ্ধারের জন্য উদ্যোগী হন। তিনি বিদ্যাপতি নামে এক চতুর ব্রাহ্মণকে দায়িত্ব দেন ওই মূর্তি উদ্ধারের । অথচ শত চেষ্টা করেও বিদ্যাপতি মূর্তির সন্ধান পেতে বিফল হন। শেষে বিদ্যাপতি বিশ্ববাসুর কন্যা ললিতাকে বিবাহ করেন। এরপর তিনি বিশ্ববাসুর কাছে অনুরোধ জানান নিলমাধব দর্শনের। জামাতার এহেন অনুরোধ বিশ্ববাসু উপেক্ষা করতে পারেন নি অথচ বিশ্বাবাসু চান না যে কেউ সেই মূর্তির সন্ধান পাক।
অনেক চিন্তা করে তিনি স্থির করেন বিদ্যাপতিকে চোখ বেঁধে সেই গোপন স্থানে নিয়ে যাওয়া হবে যাতে তিনি সেই জায়গার সন্ধান না পান। কিন্তু চতুর বিদ্যাপতি যাওয়ার সময় সারা পথে সর্ষে দানা ছড়াতে ছড়াতে যান। যার থেকে পরবর্তী সময় সর্ষে গাছ বের হয়।
এরপর তিনি ইন্দ্রদ্যুম্ন এর রাজসভায় ফিরে আসেন এবং রাজাকে সেই সর্ষে গাছ দেখে নীলমাধবের কাছে নিয়ে যান। কিন্তু রাজা যখনই সেখানে প্রবেশ করেন সাথে সাথে মূর্তি অদৃশ্য হয়ে যায়। এতে রাজা অত্যন্ত হতাশ এবং দুখিত হন | তিনি কঠিন তপস্যা শুরু করেন। অবশেষে জগন্নাথদেব রাজাকে স্বপ্নের মধ্যে দিয়ে দর্শন দেন এবং আদেশ করেন মন্দির ও মূর্তি স্থাপন করে তাঁর পুজো শুরু করতে।
তাঁর আদেশ মতই তৈরি হয় মন্দির। সমুদ্রে ভেসে আসা কাঠের গুড়ি দিয়ে শুরু হয় মূর্তি তৈরির কাজ। স্বয়ং নারায়ণ বৃদ্ধের ছদ্মবেশে আসেন মূর্তি নির্মাণ করতে। কিন্তু তিনি রাজাকে শর্ত দেন যতদিন না মূর্তি তৈরি হচ্ছে ততদিন কেউ মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবে না। সেইমতো কাজ ও শুরু হয়। কিন্তু বেশ কিছুদিন যাওয়ার পর রাজা ও রানী আর ধৈর্য্য রাখতে পারেন না। তারা মন্দিরের ভিতরে প্রবেশ করেন। ভিতরে প্রবেশ করার সাথে সাথে বৃদ্ধরুপী নারায়ণ অন্তর্হিত হন ও দৈববাণী দেন যেন সেই অর্ধ সমাপ্ত মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করা হয়।
রাজা সেই নির্দেশ মত জগন্নাথ দেবকে প্রতিষ্ঠা করেন ও পূজা শুরু করেন।
---------------------
সায়ন্তন বসু
---------------------
সায়ন্তন বসু
---------------------
Comments
Post a Comment