শহরের মাঝে প্রকৃতির কোলে (বোটানিক্যাল গার্ডেন)



শনিবার ছুটির দিন, তারপর আবার শীতের দুপুর। ঘরে থাকতে মোটেও মন চাইছে না। কিন্তু যাবই বা কোথায়? সবে বড়দিন গেছে, এখন যেখানেই যাই সেখানেই ভিড়। তখনই মনে পড়লো বোটানিক্যাল গার্ডেন এর কথা। যেমনি ভাবা তেমনি কাজ। মেয়ে আর অর্ধাঙ্গিনীকে সাথে নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম বোটানিক্যাল গার্ডেন ( আচার্য জগদীশচন্দ্র বোস ইন্ডিয়ান বোটানিক গার্ডেন ) - এর উদ্দেশ্যে।বাড়ির সামনে থেকেই টোটো ধরে চলে এলাম বি গার্ডেন এ।



স্কুল জীবনে বহুবার এসেছি এখানে, কিন্তু তারপর মাঝে প্রায় দুদশক পার হয়ে গেছে এখানে আর আসা হয়ে ওঠেনি। ঢোকার জন্য এখন টিকিট লাগে। ভালো maintenance এর জন্যে ব্যবস্থাটা মন্দ নয়। মাথাপিছু ১০ টাকা করে আর camera র জন্য ২০ টাকা।



এখন আবার নতুন পালক যুক্ত হয়েছে - ব্যাটারী চালিত গাড়ি। সারা পার্কটা ঘুরিয়ে দেখায়।



বরাবরের মত ঢুকেই মনটা জুড়িয়ে গেল। ধোঁয়াধুলোয়ে ভরা শহরের মধ্যে এ যেন এক মরুদ্যান। মেয়েকে চেনাতে লাগলাম একে একে বাঁশগাছ, দুমাথা তালগাছ, মেহগিনী গাছ আরো কত গাছ। সব গাছের গায়ে লেখা আছে তাদের নাম। মাথার ওপর দিয়ে উড়ে গেল একঝাঁক টিয়াপাখি। কখনো দেখলাম কোকিল বসে আছে আসন্ন বসন্তের অপেক্ষায়। কখনোবা কাঠঠোকরা ব্যস্তভাবে উড়ে গিয়ে এক গাছ থেকে অন্য গাছে বসলো। প্রকৃতি যেন ঘিঞ্জি শহরটা থেকে খুব যত্ন করে আলাদা করে রেখে দিয়েছে জায়গাটিকে।




এসব দেখতে দেখতে একসময় চলে এলাম সেই বিখ্যাত বটগাছের কাছে। পাঁচশো বছর ধরে ক্রমশই বেড়ে চলেছে এর ব্যপ্তি (প্রায় ১৮,৯১৮ বর্গ মিটার) । মূল কান্ডটা নষ্ট হোয়ে গেলেও প্রায় ৩৭৭২ টি ঝুরি নিয়ে সুস্থ সবল ভাবে বেঁচে আছে গাছটি। আমার মেয়ে তো বিশ্বাসই করতে পারছিল না যে ওটা একটা গাছ খালি বলে ওটা তো একটা বন। প্রকৃতির কোলে থাকতে থাকতে কখন যে বিকাল পেরিয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেছে খেয়ালই করিনি। security র বাঁশির শব্দে খেয়াল হলো সময় শেষ এবার বিদায় নেওয়ার পালা।


আপনারাও একবেলা প্রকৃতির কোলে নিরিবিলিতে কাটিয়ে আসুন না হাওড়ার শিবপুরের বোটানিক্যাল গার্ডেন এ।





Comments

Popular posts from this blog

সুন্দরবনের দুয়ারে ঝড়খালি (Jharkhali - Sundarban)

রামরাজাতলা (Ramrajatala - Howrah)

কবিগুরুর দেশে তিনদিন ( পর্ব - ১ ) - বিশ্বভারতী