Posts

Showing posts from March, 2018

শহরের মাঝে প্রকৃতির কোলে (বোটানিক্যাল গার্ডেন)

Image
শনিবার ছুটির দিন, তারপর আবার শীতের দুপুর। ঘরে থাকতে মোটেও মন চাইছে না। কিন্তু যাবই বা কোথায়? সবে বড়দিন গেছে, এখন যেখানেই যাই সেখানেই ভিড়। তখনই মনে পড়লো বোটানিক্যাল গার্ডেন এর কথা। যেমনি ভাবা তেমনি কাজ। মেয়ে আর অর্ধাঙ্গিনীকে সাথে নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম বোটানিক্যাল গার্ডেন ( আচার্য জগদীশচন্দ্র বোস ইন্ডিয়ান বোটানিক গার্ডেন ) - এর উদ্দেশ্যে।বাড়ির সামনে থেকেই টোটো ধরে চলে এলাম বি গার্ডেন এ। স্কুল জীবনে বহুবার এসেছি এখানে, কিন্তু তারপর মাঝে প্রায় দুদশক পার হয়ে গেছে এখানে আর আসা হয়ে ওঠেনি। ঢোকার জন্য এখন টিকিট লাগে। ভালো maintenance এর জন্যে ব্যবস্থাটা মন্দ নয়। মাথাপিছু ১০ টাকা করে আর camera র জন্য ২০ টাকা। এখন আবার নতুন পালক যুক্ত হয়েছে - ব্যাটারী চালিত গাড়ি। সারা পার্কটা ঘুরিয়ে দেখায়। ...

ইতিহাসের খোঁজে মালদায় ( পর্ব - ২ )

Image
প্রথম পর্বের পর : রামকেলি দর্শনের পর এবার আমরা ছুটে চলেছি মালদার অপর এক জায়গা গৌড় দর্শনের জন্য। আমাদের গৌড় দর্শন শুরু হলো বড়সোনা মসজিদ দিয়ে। বড়সোনা মসজিদ বা বারদুয়ারী মসজিদ গৌড়ের সবথেকে সুন্দর স্থাপত্যগুলোর মধ্যে একটি। সম্ভবত এই মসজিদে ১২টি প্রবেশদ্বার ছিলো বলে একে বারদুয়ারী মসজিদ বলে। অসংখ্য থামযুক্ত এই মসজিদের মাথায় ৪৪টি গম্বুজ ছিল।  তবে এর মধ্যে মাত্র ১১টি এখনও দেখতে পাওয়া যায় বাকিগুলো সব ধ্বংসপ্রাপ্ত। সার সার থামের মধ্যে দিয়ে আলো আঁধারীর খেলা দেখার মত।মসজিদের প্রবেশের গেটগুলোও বেশ সুন্দর। বেশ কিছুক্ষণ এখানে কাটিয়ে আমরা এগিয়ে চললাম আমাদের পরবর্তী গন্তব্য় দাখিল দরওয়াজার দিকে। গৌড়ের ধ্বংস প্রাপ্ত দুর্গের প্রবেশদ্বার ছিল এই বিশালাকার দাখিল দরওয়াজা। একসময় এখান থেকে কামান থেকে তোপ  দেগে সুলতানকে সালামী দেওয়া হত। তাই এই দরজার অপর নাম সালামী দরওয়াজা। এই দরজার ভিতরটা বেশ অন্ধকারাচ্ছন্য আর স্যাঁতস্যাঁতে। দরজা দিয়ে ভিতরে ঢুকলেই দুপাশে ৱয়েছে প্রহরীদের থাকার ঘর। এই দরোয়াজার গায়েও রয়েছে অপূর্ব টেরাকোটার কাজ। দরজার দুপাসটা উঁচু হয়ে ...

ইতিহাসের খোঁজে মালদায় ( পর্ব - ১ )

Image
আদিনা মসজিদ বড় সুন্দর আমাদের এই বাংলা। একে একদিকে প্রকৃতি যেমন নিজের রূপের ডালি দিয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে তুলেছে অপরদিকে এর রয়েছে গৌরবময় ইতিহাসও। বাংলার এরকমই এক ঐতিহাসিক স্থান মালদা। প্রাচীন বাংলার বহু ঐতিহাসিক নিদর্শন ছড়িয়ে রয়েছে এই মালদায়। কথিত আছে এই স্থানের সূচনা হয় সেই রামায়ণের যুগে। রামচন্দ্রের ভ্রাতা লক্ষণ লক্ষণাবতী নামে এই নগরীর সূচনা করেন। পরবর্তী কালে বাংলার বিখ্যাত রাজা শশাঙ্কের শাসনকালে এই স্থান গৌড় নামে পরিচিত হয়। সপ্তদশ শতকে পাল বংশীয় রাজা গোপাল এক সার্বভৌম নির্বাচনের মাধ্যমে স্বাধীন গৌড়ের রাজা নির্বাচিত হন ও পাল সম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর এখানে সেন বংশের রাজারাও এখানে রাজত্ব করেন। তবে গৌড়ের সবথেকে উত্থান হয় যখন মুসলিম শাসকরা এখানে রাজত্ব শুরু করেন। প্রায় তিন শতক ধরে মুসলিম শাসকরা গৌরকে তাদের ক্ষমতার প্রাণকেন্দ্র হিসাবে প্রতিষ্ঠা করেন এবং সাজিয়ে তোলেন । পরবর্তী কালে বাংলার সুলতান তাদের রাজধানী গৌড় থেকে মালদা জেলারই অপর এক স্থান পান্ডুয়াতে স্থানান্তরিত করেন। এইসময় পাণ্ডুয়াকে নতুন করে সাজানোর জন্য তারা গৌড়ে প্রচুর লুঠপাট করেন ও গৌড়কে প্...

পুরীর গপ্পো

Image
বাঙালির এক অতি প্ৰিয় বেড়ানোর জায়গা পুরী। এখানে একদিকে যেমন জগন্নাথ দেব বিরাজমান, অপরদিকে আছে দামাল সমুদ্রের হাতছানি। একইসাথে আধ্যাত্মিকতা আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এই মেলবন্ধনের স্বাদ পেতে আপামর বাঙালি তাই এখানে বারবার ছুটে আসে। তবে আমার এই লেখা তবে পুরী বেড়ানোর ভ্রমণ কাহিনী নয়, বরং পুরীর মন্দিরকে ঘিরে যে পৌরাণিক কাহিনী জড়িয়ে আছে তাকে নিয়েই। কথিত আছে শবর রাজ বিশ্ববাসু গভীর জঙ্গলে অত্যন্ত গোপনীয় ভাবে জগন্নাথ দেবকে নিলমাধব হিসাবে পুজো করতেন। এই কথা শোনার পর মালব্য রাজ ইন্দ্রদ‍্যুম্ন সেই মূর্তিকে উদ্ধারের জন্য উদ্যোগী হন। তিনি বিদ্যাপতি নামে এক চতুর ব্রাহ্মণকে দায়িত্ব দেন ওই মূর্তি উদ্ধারের । অথচ শত চেষ্টা করেও বিদ্যাপতি মূর্তির সন্ধান পেতে বিফল হন। শেষে বিদ্যাপতি বিশ্ববাসুর কন্যা ললিতাকে বিবাহ করেন। এরপর তিনি বিশ্ববাসুর কাছে অনুরোধ জানান নিলমাধব দর্শনের। জামাতার এহেন অনুরোধ বিশ্ববাসু উপেক্ষা করতে পারেন নি অথচ বিশ্বাবাসু চান না যে কেউ সেই মূর্তির সন্ধান পাক। অনেক চিন্তা করে তিনি স্থির করেন বিদ্যাপতিকে চোখ বেঁধে সেই গোপন স্থানে নিয়ে যাওয়া হবে ...